পূর্ণাঙ্গ ইসলামী ব্যাংকিংয়ে বাধা কোথায়?

zahirbabor.com2এক ভদ্রলোক সরকারি চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন। এককালীন মোটা অংকের কিছু অর্থ তিনি পেয়েছেন। আগে ধর্মকর্ম তেমন না করলেও এখন তিনি পুরোদস্তুর ধার্মিক। ইসলামের যাবতীয় বিধিবিধান তিনি অক্ষরে অক্ষরে পালন করেন। পেনশনের টাকাগুলো তিনি কোথায় রাখবেন-এ নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায়। কারণ তিনি আর সুদ খেতে চান না। এজন্য সাধারণ ব্যাংকে এতগুলো টাকা রাখার প্রশ্নই আসে না। ইসলামী ব্যাংকগুলোর ব্যাপারেও তিনি পুরোপুরি আশ্বস্ত নন। অনেকের কাছে শুনেছেন ইসলামী ব্যাংকগুলো সুদমুক্ত লেনদেনের কথা বললেও তারাও এর বাইরে নয়। তারা একটু ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে সুদ খায়। এখন তিনি কী করবেন? এতগুলো টাকা তো আর ঘরে নিয়ে বসে থাকা যাবে না। অবশেষে একজন মুফতী সাহেবের কাছে গেলেন। তিনি পরামর্শ দিলেন, কোনো ইসলামী ব্যাংকে টাকাগুলো রেখে দিতে। কিন্তু ইসলামী ব্যাংকগুলো কি পুরোপুরি ইসলামী-সেই প্রশ্ন তো থেকেই যায়। মূলত মুফতী সাহেবের কাছেও নেই এর কোনো স্পষ্ট জবাব। এমনকি যারা ব্যাংকগুলো পরিচালনা করেন ইসলামের নামে প্রচলতি ব্যাংকগুলো পুরোপুরি ইসলামী শরীয়া মোতাবেক পরিচালিত-এ কথা তারাও বলতে পারেন না।
এই সমস্যাটি শুধু একজন-দুজনের না। আমাদের দেশের দীনদার মুসলমানদের জন্য এই সমস্যাটি আজ প্রকট আকার ধারণ করেছে। আর্থিক আদান-প্রদান প্রায় সবাইকেই করতে হয়। নিরাপত্তার স্বার্থে এর জন্য ব্যাংকিংয়ের কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু আমাদের দেশের প্রচলিত ব্যাংকগুলো পুরোপুরি সুদনির্ভর। আমাদের গোটা অর্থনীতির ভিতটাই সুদের ওপর। এটা শুধু আমাদের দেশ নয়, আজ সারা বিশ্বের অর্থব্যবস্থা সুদের ওপর টিকে আছে। সুদ ছাড়া অর্থনীতি চলতে পারে এটা অনেকে ভাবতেই পারে না। কিন্তু একজন মুসলমান তো আর সুদকে বৈধতা দিতে পারে না। কুরআনে কারীমে সুদের ব্যাপারে সরাসরি নিষেধাজ্ঞা এসেছে। এমনকি আল্লাহ তাআলা সুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। সুদের মতো এত ভয়াবহ গোনাহ খুব কমই আছে। সুদি ব্যবস্থাকে মেনে নেয়া বা এই ব্যবস্থায় লেনদেন করা কোনোটাই বৈধ নয়। সুদের যত প্রচলনই হোক কেয়ামত পর্যন্ত কেউ এটাকে বৈধতা দিতে পারবে না। কুরআন ও হাদিসে সুদের ব্যাপারে যত সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা এসেছে তা খুব কম বিষয়েই পাওয়া যায়। এজন্য একজন মুসলমান সুদভিত্তিক লেনদেন করতে পারে না।
আমাদের অনেকের ধারণা অন্যান্য ধর্মের মতো ইসলাম গতানুগতিক একটি ধর্ম। আর ধর্ম মানে হলো কিছু বিশ্বাস, সংস্কার এবং আনুষ্ঠানিকতার নাম। সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জীবনের সঙ্গে এর কোনো যোগসূত্রতা নেই। অথচ ইসলাম কখনও গতানুগতিক এ ধরনের কোনো ধর্ম নয়। ইসলামের আছে কিছু নীতিমালা ও বিধান, যা শুধুই ইবাদত, বিশ্বাস এবং আনুষ্ঠানিকতার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় বরং আমাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবনেও এর প্রভাব বিস্তৃত। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিগত প্রায় তিনশ বছর ধরে এসব নীতিমালা ও বিধান আমাদের দৈনন্দিন জীবন থেকে পৃথক করে ফেলা হয়েছে। ইসলাম শুধু মসজিদ-মাদরাসার চার দেয়াল, বুযুর্গানে দীনের মাজার ও খানকায় আবদ্ধ হয়ে গেছে। আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য, লেনদেন, আদান-প্রদানের সঙ্গে এর কোনো সম্পৃক্ততা নেই। অথচ আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা পূর্ণাঙ্গরূপে ইসলামে প্রবেশ কর।’ এর মর্মার্থ হলো, তোমরা নিছক মসজিদের মধ্যেই মুসলমান নও। বরং তোমরা বাজারেও মুসলমান, লেনদেনের সময়ও তোমরা মুসলমান। মুসলমান সেই যিনি প্রতিটি মুহূর্তে নিজেকে আল্লাহর কাছে সোপর্দ করে। ইসলামের অন্যান্য মৌলিক বিষয়ের মতোই গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক দিকটি। সম্পদ কিভাবে উপার্জন করবে এবং তা ব্যয়ের পদ্ধতিও ইসলামের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
zahirbabor.com1একসময় সুদমুক্ত অর্থব্যবস্থার কথা চিন্তা করাও যেখানে অকল্পনীয় ছিল এখন সেটা বাস্তব। প্রচলিত ইসলামী ব্যাংকগুলো সুদমুক্ত অর্থব্যবস্থা বাস্তবায়নে যথেষ্ট ভূমিকা পালন করছে। ইসলামের নামে যেসব ব্যাংক আছে সেগুলো শতভাগ সুদমুক্ত কিনা এটা নিয়ে বিতর্ক আছে। পুরোপুরি শরীয়াভিত্তিক চলছে এমন দাবি সেই ব্যাংকগুলোর কর্তৃপক্ষও করে না। তবে তারা যথাসম্ভব সুদমুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছে। মন্দের ভালো হিসেবে ইসলামী ব্যাংকিংকে সমর্থন করা ছাড়া মুসলমানদের সামনে কোনো পথ খোলা নেই। কেউ যদি সুদমুক্ত লেনদেনের জন্য ইসলামী ব্যাংকগুলোর দ্বারস্থ হয় আর ইসলামী ব্যাংকগুলো তাদেরকে ধোঁকাও দেয় তবুও নিয়তের বিশুদ্ধতার কারণে গ্রাহকেরা পার পেয়ে যাবেন। ইসলামী ব্যাংকিংয়ের নামে কেউ ধোঁকাবাজি করলে এর দায় তাদের ওপরই বর্তাবে। এজন্য এ বিষয়টি ইসলামী ব্যাংকগুলোর কর্তৃপক্ষের ওপরই ছেড়ে দেয়া উচিত।
সারা বিশ্বেই আজ চলছে অর্থনৈতিক মন্দা। এ মন্দার অন্যতম কারণ সুদভিত্তিক অর্থনীতি। সুদের ভয়াবহতা অর্থনীতির জন্য সুফল বয়ে আনে না এটাই স্বাভাবিক। কারণ সুদি লেনদেনের দ্বারা উপকৃত হয় হাতেগোনা কয়েকজন মানুষ। আর এর দায় ভোগ করতে হয় সবাইকে। আল্লাহ তাআলা যেখানে ঘোষণা করেছেন সুদকে মিটিয়ে দেবেন, সেখানে যত চেষ্টাই করা হোক সুদ দ্বারা উন্নতি করার কোনো সুযোগ নেই। এজন্য চরম মন্দা চলাকালেও বিশ্বব্যাপী ইসলামিক ব্যাংকিং ভালো করছে। এমনকি আমাদের দেশেও অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় ইসলামী ব্যাংকগুলোর প্রবৃদ্ধির হার বেশি। এজন্য অনেক সাধারণ ব্যাংক ইসলামিকে রূপান্তরের চেষ্টা করছে। আবার অনেকেই ইসলামী উইন্ডো (শাখা) খুলছে। তারা ইসলামী অর্থব্যবস্থা বাস্তবায়নের জন্য যে ইসলামী ধারার ব্যাংকিংয়ের দিকে ঝুঁকছে বিষয়টি এমন নয়; বরং নিজেদের অস্তিত্বের স্বার্থেই পুরোপুরি ইসলামী ব্যাংকিং চালু অথবা ইসলামী উইন্ডো চালু করতে চাচ্ছে।
এক পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, বাংলাদেশে মোট ৮টি পরিপূর্ণ ইসলামী ব্যাংক রয়েছে। ১৭টি ব্যাংকে রয়েছে ইসলামী ব্যাংকিং উইন্ডো বা শাখা। ১৩টি ইসলামী ক্ষুদ্র অর্থায়ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ৬টি তাকাফুল ও ৩টি অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ব্যাংকিং সেক্টরের ২১ শতাংশ মার্কেট শেয়ার ইসলামী আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের। তবে এখনও বাংলাদেশে কোনো পৃথক ইসলামিক ব্যাংকিং আইন তৈরি হয়নি। তাছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকও ইসলামী ব্যাংকগুলোর উন্নতি ও নিয়ন্ত্রণের জন্য আলাদা কোনো ব্যবস্থাপনা রাখেনি। বরং ইসলামী ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেতিবাচক নজরদারিতে থাকে সবসময়। তথাকথিত জঙ্গি অর্থায়নের জুজু তুলে রীতিমতো হয়রানি করা হয় ইসলামী ব্যাংকগুলোর গ্রাহকদের। সম্প্রতি ইসলামী ব্যাংকগুলো ফ্রট (ধোঁকাবাজি) বলে আখ্যায়িত করেছেন খোদ অর্থমন্ত্রী। তার এই নেতিবাচক ও অনাকাক্সিক্ষত মন্তব্য দ্বারাই বুঝে আসে ইসলামী ব্যাংকিংকে সরকার ভালো চোখে দেখে না। বিশ্বের দ্বিতীয় মুসলিম এই দেশে ইসলামী ব্যাংকিং সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য কোনোভাবেই মেনে নেয়ার মতো নয়। জার্মানি, ভারতসহ বিভিন্ন সেক্যুলার দেশেও আজ ইসলামী ব্যাংকিং চালু হয়েছে। তারা যে ইসলামের প্রতি দরদ নিয়ে এ কাজটি করেছে তা কিন্তু নয়, বরং লাভজনক হিসেবেই তারা এর প্রতি উদ্বুদ্ধ হচ্ছে।
অনেকের প্রশ্ন, সাধারণ সুদ আর ইসলামী ব্যাংকগুলোর লাভের মধ্যে তফাতটা কী? আমরা সাধারণ ব্যাংকগুলো টাকা রাখলে যে হারে ইন্টারেস্ট পাই ইসলামী ব্যাংকগুলো তো এর চেয়ে বেশি হারে লাভ দেয়। দুটোর মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য তো চোখে পড়ে না। যারা এমন প্রশ্ন করেন তাদের একটু বোঝা উচিত, উভয়ের মধ্যে পার্থক্য আছে। যেমন বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্ককে আমাদের সমাজ-ধর্ম কোনোটাই মেনে নেয় না। সামান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার পর এই একই জিনিস সর্বমহলে সমাদৃত। তেমনি ‘সুদ’ আর ‘লাভ’ দুটি জিনিস দেখতে বাহ্যত এক রকম হলেও উভয়টির মধ্যে আসমান-জমিন পার্থক্য। সুদ নির্ধারিত কিন্তু লাভ নির্ধারিত নয়। সুদভিত্তিক লেনদেন সরাসরি আল্লাহ ও রাসূলের সঙ্গে লড়াই করার নামান্তর। আর লাভ-ক্ষতির ভিত্তিতে যে ব্যবসা এর জন্য আল্লাহ ও রাসূলের আশির্বাদের ঘোষণা রয়েছে। সুতরাং দুটোকে এক পাল্লায় মাপা নিতান্তই বোকামি।
এ কথা সত্য, আমাদের ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলো এখনও পুরোপুরি শরিয়া পরিপালনে সক্ষম হয়ে উঠেনি। এর অনেকগুলো কারণও আছে। দেশের প্রচলিত আইন ও পারিপার্শ্বিকতার কারণে অনেকে চাইলেও পুরোপুরি শরিয়াভিত্তিক চলতে পারে না। আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংক পুরোটাই সুদভিত্তিক। যেকোনো ব্যাংক পরিচালিত হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে একটি লেনদেনও থাকে। সুতরাং চাইলেই কিছু কিছু ক্ষেত্রে সুদি ব্যবস্থাপনার বাইরে যেতে পারে না ইসলামী ব্যাংকগুলো। তাছাড়া যারা ইসলামী ব্যাংকগুলো পরিচালনা করছেন ইসলামী শরীয়া সম্পর্কে তাদের জানাশোনার ঘাটতিও রয়েছে। একটি ব্যাংকের বেশির ভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারী বাস্তবজীবনে ইসলামকে ধারণ করলেই পুরোপুরি শরিয়া পরিপালন সম্ভব। যাদের বাস্তব জীবনে ইসলামের বালাই নেই তারা চাইলেও পুরোপুরি শরিয়া বাস্তবায়ন করতে পারবেন না-এটাই স্বাভাবিক।
ইসলামী ব্যাংকগুলো পুরোপুরি শরিয়াভিত্তিক করতে হলে এর জন্য এ বিষয়ে দক্ষ কর্মীবাহিনী গড়ে তুলতে হবে। কিন্তু আমাদের দেশে ইসলামী ব্যাংকিং বিষয়ে পারদর্শী গড়ে তোলার জন্য এখনও কোনো প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি। ইসলামী ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে জড়িত সবার ইসলামের মৌলিক শিক্ষা থাকা জরুরি। অনেক ক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংকারদের মধ্যে সেটাও নেই। আমাদের দেশে ইসলামী ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে যারা জড়িত তারা এটাকে নিছক ব্যবসা বা পেশা হিসেবে নিচ্ছেন। ইসলামী অর্থব্যবস্থা বাস্তবায়ন, ইসলামী শরীয়া পরিপালন এসব বিষয়ে তাদের কোনো মনোযোগ নেই। এজন্য এ ব্যবস্থাপনাটি সমালোচনার ঊর্ধ্বে উঠতে পারছে না। সত্যিকার অর্থে ইসলামের প্রতি দরদ থাকলে এবং ইসলামী অর্থব্যবস্থার পুরোপুরি বাস্তবায়ন উদ্দেশ্য হলে তারা এক্ষেত্রে কার্যকর উদ্যোগ নিতেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তাদের আন্তরিকতার যথেষ্ট অভাব রয়েছে।
ইসলামী ব্যাংকিংকে পুরোপুরি শরিয়াভিত্তিক করতে হলে ওলামায়ে কেরামকে এর সঙ্গে যুক্ত করার কোনো বিকল্প নেই। কারণ আলেমরা দীনের মৌলিক জ্ঞান রাখেন। ইসলামী অর্থব্যবস্থা সম্পর্কেও তারা যথেষ্ট অভিজ্ঞ। তাদেরকে প্রচলিত অর্থব্যবস্থার সঙ্গে পরিচিত করিয়ে কাজে লাগাতে পারলে পুরোপুরি শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠা সম্ভব। নব্বইয়ের দশকে একটি ইসলামী ব্যাংক বেশ কিছু আলেম কর্মী নিয়োগ দিয়েছিল। তারা বেশ ভালো করেছেন। এখনও ওই ব্যাংকটির বিভিন্ন শাখায় আলেমরা দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব আঞ্জাম দিচ্ছেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে এ ধরনের কোনো উদ্যোগ আর নেয়া হয়নি। আলেম কর্মীদের সম্পৃক্ততা বাড়লে ইসলামী ব্যাংকগুলোর জন্য পুরোপুরি শরিয়া পালন সহজ হবে। আলেমদের সম্পৃক্ততা ছাড়া শতভাগ শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকিং কখনও সম্ভব নয়। অনেকেই বলতে পারেন, ইসলামী ব্যাংকগুলোতে তো শরিয়া বোর্ড আছে। এসব বোর্ডের সদস্যরা তো বেশির ভাগই আলেম। কিন্তু আমরা জানি, যারা এসব বোর্ডে আছেন কয়েক মাস পর পর তাদেরকে ডেকে নিয়ে কিছু ব্রিফিং করা হয়। অনেক সূক্ষ্ম বিষয় আছে যা বেশির ভাগ সদস্য বুঝেনই না। তাদের এই পৃষ্ঠপোষকতা অবশ্যই সহায়ক, তবে সার্বক্ষণিক আলেম কর্মী ছাড়া পুরোপুরি ইসলামী ব্যাংকিং সম্ভব নয়। এই বাস্তবতাটুকু ইসলামী ধারার ব্যাংক কর্তৃপক্ষের বোঝা উচিত।
ইসলামী অর্থব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা প্রতিটি মুসলিমের ঈমানের দাবি। আর ঈমান বাঁচানোর কাজ ওলামায়ে কেরামই বেশি করে থাকেন। তাই এ সেক্টরে ওলামায়ে কেরামের সবচেয়ে অগ্রগামী হওয়া সময়ের দাবি। আর এরজন্য ব্যাংকগুলোর কর্তৃপক্ষকে যেমন আন্তরিক হতে হবে তেমনি ওলামায়ে কেরামকেও বাড়তি কিছু যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। আলেমরা সাধারণত ইসলামী বিষয়ে পাণ্ডিত অর্জন করে থাকেন। কিন্তু নিছক এই যোগ্যতা দিয়ে ব্যাংকার হতে পারবেন না। ইসলামী অর্থনীতি ও আধুনিক অর্থনীতি বিষয়ে তাদের বাড়তি যোগ্যতারও প্রয়োজন রয়েছে। আর এর জন্য লাগবে স্বতন্ত্র কিছু প্রতিষ্ঠান যেখানে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের অর্থনীতি বিষয়ে পারদর্শী করে তোলা হবে। ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোর কর্তৃপক্ষ এবং ওলামায়ে কেরাম সচেষ্ট হলেই এদেশে পুরোপুরি শরিয়াভিত্তিক অর্থব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হবে।

*

*

Top