সংবিধানে একটি শব্দ থাকলে এমন কী ক্ষতি হয়ে যাবে!

zahirbabor.comকুরআন-সুন্নাহবিরোধী কোনো আইন করবে না বলে ওয়াদা করে যারা ক্ষমতায় এসেছে, ‘মদিনার সনদে’ দেশ চালানোর ঘোষণা দিয়েছে যারা, তারা সংবিধানে ‘ইসলাম’ শব্দটি সহ্য করতে পারবে না এটা বিশ্বাস করার মতো না। আমার বিশ্বাস, ২০০১ সালের একটি ‘বিতর্কিত’ রায়কে কেন্দ্র করে যে দলটির ভরাডুবি ঘটেছিল সেই দল আবার পুরোনো ফাঁদে পা দেবে না। তবে অদৃশ্য চাপে কিছু ঘটে গেলে পরিণতি কারো জন্যই শুভকর হবে না।
…………………………………….
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সেটা কি শুধুই আমাদের দেশে? ইরাক, পাকিস্তান, ফিলিস্তিন, তিউনিসিয়া, আফগানিস্তান, আলজেরিয়া, ব্রুনেই, কোমোরোস, জর্দান, লিবিয়া, মালদ্বীপ, মালয়েশিয়া, মৌরিতানিয়া, মরক্কো, মিশর, কাতার, সৌদি আরব, সোমালিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান, ওমান,  কুয়েত, ইয়েমেন, বাহরাইন এসব দেশেও তো রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। কই তাদের তো কোনো সমস্যা হচ্ছে না! অনেক দেশ তো বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের চেয়েও এগিয়ে। সুতরাং ইসলামকে বাদ দেয়ার খোড়া যুক্তি দাঁড় করার কী উদ্দেশ্য?
অনেকে বলছেন রাষ্ট্রের আবার ধর্ম কী? ইংল্যান্ড-ফ্রান্সসহ পৃথিবীর বিভিন্ন উন্নত দেশেরও তো একটি ধর্ম নির্ধারিত আছে, তাদের ক্ষেত্রে কী বলবেন। রাষ্ট্রের ধর্ম আছে বলে কি তারা পিছিয়ে আছে? আপনাদের চেয়ে তথাকথিত মানবাধিকারের দিক থেকে তারা কি পিছিয়ে? অনেকে বলছেন, এরশাদ একজন চরিত্রহীন স্বৈরশাসক ছিলেন, তিনি রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানে যোগ করেছিলেন, তাই এটা বাদ দিতে হবে। এটা কোনো যুক্তি হলো? এরশাদ তো দেশের অনেক উন্নতিও করেছেন, সেটা কি পরবর্তী শাসকেরা বাদ দিয়েছেন?
…………………………………….
‘কাগজে-কলমে ইসলাম আছে, বাস্তবে এর কোনোই অস্তিত্ব নেই’ এমন ইসলামের কোনো প্রয়োজন আছে বলে আমিও মনে করি না। তবে এটি একটি আবেগের বিষয়। আমি যে বিশ্বাস লালন করি সেটা রাষ্ট্রের শাসনতন্ত্রে লেখা আছে; এখন কেউ এটা বাদ দিতে চাইলে আমার ইগুতে লাগবে এটাই স্বাভাবিক। সংবিধানে তো কত কিছুই আছে, এর প্রয়োগ আছে কতটির? একটি শব্দ সংবিধানে থাকলে এমন কী ক্ষতি হয়ে যাবে! এই শব্দটি তো কারও কোনো ক্ষতি করছে না, কারও কোনো কাজে প্রতিবন্ধকতাও সৃষ্টি করছে না। সুতরাং এটা নিয়ে অহেতুক, অযাচিতভাবে একটি ঘোলাটে পরিস্থিতি সৃষ্টির কোনো মানে হয় না।
………………………………….
কেউ নামাজ পড়ে না, ধর্মকর্ম করে না; এটা নিঃসন্দেহে অন্যায়; কিন্তু তবুও সে মুসলমান। তবে ইসলামকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করলে, ইসলামের কোনো বিধানকে অস্বীকার করলে সে আর মুসলমানের গণ্ডিতে থাকে না। ধর্ম এটি একটি বিশ্বাস, আদর্শ ও আবেগের জায়গা। এখানে যুক্তি টেনে এনে অন্যকিছুর সঙ্গে তুলনা করা উচিত নয়। এদেশের মুসলমানরা ধর্মকর্ম না করলেও তাদের ঈমানি চেতনার জায়গা এখনও সবল। এই চেতনায় আঘাত করলে তারা এখনও বারুদের মতো জ্বলে উঠে সেটার প্রমাণ অনেকবার মিলেছে। সুতরাং আগুন নিয়ে খেলা করা কারও জন্যই মঙ্গলজনক নয়।

২৭.০৩.২০১৬
পুরানা পল্টন

Related posts

*

*

Top